জার্নাল রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ব্যস্ততম ম্যানহাটনে দুষ্কৃতকারীর ধাক্কায় ট্রেনে নিচে কাটা পড়ে জিনাত হোসেন (২৪) নামে এক বাংলাদেশি কলেজ ছাত্রী নিহত হয়েছেন। তিনি নিউইয়র্কের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হান্টার কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। স্থানীয় সময় বুধবার (১১ মে) রাত ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জিনাতের মৃত্যুর খবরে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একইসঙ্গে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই মৃত্যুর ঘটনা প্রচার করে ট্রেনে চড়ার ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিক সতর্ককতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন।
জিনাতকে ধাক্কা দেয়া দুষ্কৃতকারীর পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। জিনাত ছিনতাই নাকি হেইট ক্রাইমের শিকার, তাও জানা যায়নি এখনো। তবে পুলিশ ধারণা করছে, এটি ছিনতাইয়ের ঘটনা হতে পারে। জিনাতের সঙ্গে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল ছিনতাইকারী। টানাহেঁচড়ার একপর্যায়ে ছিনতাইকারী তাকে সাবওয়ে ট্রেন লাইনে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই জিনাতের মৃত্যু হয়।
জিনাতের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার জগৎপুর গ্রামে। তার খালু নিউইয়র্কের আঞ্চলিক সংগঠন বৃহত্তর কুমিল্লা সমিতির সভাপতি ডা. এনামুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জিনাত হোসেন ২০১৫ সালে বাবা-মায়ের সঙ্গে নিউইয়র্কে আসেন। বাবা আমির হোসেন ও মা জেসমিন হিরার সঙ্গে থাকতেন নিউইয়র্কের ব্রুকলিনেন ৮ অ্যাভিনিউতে। তারা এক ভাই ও এক বোন।
ডা. এনামুল হক জানান, রেলস্টেশন থেকে জিনাতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো পরিবারকে ঘটনার বিস্তারিত কিছুই জানাতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে নিউইয়র্ক ব্রুকলিনে স্থানীয় পুলিশ সেখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটিকে জানিয়েছে, স্টেশনে ছিনতাইকারী ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ট্রেনের নিচে ছিটকে পড়েন জিনাত। এসময় ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান জিনাতের বাবা-মা। শোকে স্তব্ধ হয়ে উঠেছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটি।
নিউইয়র্কে শোটাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম, কমিউনিটি লিডার ড. রফিক আহমেদ, যুবনেতা সেবুল মিয়া, জাহাঙ্গীর সরকার, সাংবাদিক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, সোলায়মান আলী, এইচ এম মিজানুর রহমান, নারী নেত্রী মনিকা রায় চৌধুরীসহ অনেকেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের ট্রেনে সতর্কতার সাথে চলাফেরা করার আহবান জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন।