• Homepage
  • >
  • সব খবর
  • >
  • পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের হ্যাটট্রিক, নিজ আসনে হারলেও মমতার মুখ্যমন্ত্রী হতে বাধা নেই

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের হ্যাটট্রিক, নিজ আসনে হারলেও মমতার মুখ্যমন্ত্রী হতে বাধা নেই

কলকাতা থেকে রক্তিম দাশ : বিজেপিকে অনেকখানি পিছনে ফেলে ম্যাজিক ফিগারের অনেক বেশি আসন নিয়ে আবারও পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলার মেয়ের কাছেই রইলো বাংলা। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রয়োজন ১৪৭টি আসনের। তবে তৃণমূল ২১০টিরও বেশি আসন পেয়েছে। নিজেদের পরাজয় মেনে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানিয়েছে বিজেপি।

এদিকে নিজের আসন নন্দী গ্রামে হেরে গেছেন মমতা ব্যানার্জী। তবে নিজের আসনে হারলেও মুখ্যমন্ত্রী হতে বাধা নেই তার।

পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে দফায় দফায় জনসভা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহসহ অনেকে। ভাঙা পায়ে কেন্দ্রের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের প্রচারের বিরুদ্ধে একাই লড়েছেন মমতা। আজ মধুর ফল পেলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে অনেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলত্যাগীদের নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি। নিজের গড় ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রাম থেকে নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তিনি। বিজেপি প্রার্থী তথা পূর্ব মেদিনীপুরের ‘ঘরের ছেলে’ শুভেন্দু অধিকারীকে হারিয়ে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, তার পক্ষে অসম্ভব কিছুই নয়। যদিও নন্দীগ্রামে সামান্য ভোটে হেরেছেন মমতা।

দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটিয়ে ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে ইতিহাস গড়েছিলেন মমতা। ২০১৬ সালে সবুজ ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল বিরোধীরা। সেই মমতা সাম্রাজ্যের পতন ঘটাতে এবার একের পর এক বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এসে পশ্চিম বাংলায় প্রচার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৮টি সভা করে গিয়েছেন। কিন্তু মমতার জনপ্রিয়তাকে টলাতে পারেননি শাহ-নাড্ডা-স্মৃতি ইরানিরা। ভাঙা পা নিয়েই মিটিং-মিছিল, জনসভা চালিয়ে গিয়েছেন মমতা। দশ বছর পরও বিধানসভা ভোটে তিনিই ফ্যাক্টর, তা আজ স্পষ্ট হয়ে গেল।

মুখ্যমন্ত্রী হতে বাধা নেই: এদিকে বিধানসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। টানা তৃতীয় বার তারা সরকার গঠন করতে চলেছে; কিন্তু এই বড় আনন্দের মধ্যেও অস্বস্তির মুখে পড়েছে দলটি। কারণ নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির জয়-পরাজয় নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থায় ঐ আসনে আবারও ভোট গণনার বিষয়টি বিবেচনা করছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। তবে হারলেও মুখ্যমন্ত্রী হতে কোনো বাধা নেই মমতা ব্যানার্জির।

রবিবার (২ মে) ভোট গণনার শুরুর দিক থেকেই নন্দীগ্রাম আসনে এগিয়ে ছিলেন মমতা ব্যানার্জির এক সময়ের শিষ্য বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কখনো তিনি এগিয়ে যান, আবার কখনো মমতা ব্যানার্জি। এর মধ্যে সন্ধ্যায় ঘোষণা আসে যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নন্দীগ্রাম আসনে ১ হাজার ২০১ ভোটে জিতেছেন। পরে জানানো হয়, গণনার ১৭ এবং শেষতম রাউন্ডে কিছু ভুল হয়েছিল। মমতা ব্যানার্জি ১ হাজার ৬২২ ভোটে হেরে গেছেন।

এই ঘোষণার পর তৃণমূল কংগ্রেস জানায়, এর বিরুদ্ধে তারা আদালতে যাবে। এরপরই ভারতের নির্বাচন কমিশন ভোট পুনর্গণনা বিষয়টি বিবেচনা করছে। যে কারণে নন্দীগ্রামের ফল নিয়ে ধোঁয়াশার তৈরি হয়েছে। যদিও মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, নন্দীগ্রামের মানুষ যে রায় দিয়েছে তা আমি মাথা পেতে নেব।

এদিকে নন্দীগ্রামে মমতা ব্যানার্জি হারলেও তার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হতে কোনো বাধা নেই। ছয় মাসের মধ্যে কোনো আসন থেকে উপনির্বাচনে তাকে জয়ী হলেই হবে। ভারতে নির্বাচনি নিয়ম অনুযায়ী শপথগ্রহণের ছয় মাস পর্যন্ত বিধানসভা বা লোকসভার সদস্য না হয়েও মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তবে ঐ ছয় মাসের মধ্যে তাকে রাজ্যের ক্ষেত্রে বিধানসভা এবং ভারতের সরকার গঠনের জন্য লোকসভা বা বিধানসভায় নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে।

২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস যখন পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসেছিল, তখনো মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গের এমএলএ ছিলেন না। পরে উপনির্বাচনে জেতেন তিনি। ২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথ যখন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন তখনো তিনি উত্তর প্রদেশের এমএলএ ছিলেন না। তিনিও পরে উপনির্বাচনে জেতেন।

  • facebook
  • googleplus
  • twitter
  • linkedin
  • linkedin
  • linkedin