• Homepage
  • >
  • সব খবর
  • >
  • যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে শেখ রাসেল দিবস পালন

যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে শেখ রাসেল দিবস পালন

ছবি: সংগৃহীত

১৮ই অক্টোবর শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মবার্ষিকী পালনের লক্ষ্যে গত রোববার ১৬ই অক্টোবর, ২০২২ লস এঞ্জেলেসে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ ক্যালিফোর্নিয়া শাখার সহযোগিতায় এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এই অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের হত্যাকারীদের অন্যতম ফেরারী আসামি খুনী রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য বিশেষ পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়।

বক্তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র সহ ১৯৭৫ এর ১৫ ই আগস্টে পরিবারের ১৯ জন সদস্যের এই হত্যাকান্ডকে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ড এবং একটি নারকীয় সন্ত্রাসী ঘটনা উল্লেখ করেন।

নিউ জার্সি থেকে এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ডঃ নুরুন নবী বলেন যুদ্ধ ক্ষেত্রেও নারী শিশুকে রেহাই দেয়া হয় কিন্তু ১৫ই আগস্টে খুনীরা বঙ্গবন্ধু পরিবারের নারী শিশু সহ সবাইকে হত্যা করে। ৭১ এর পরাজিত শক্তি তাদের পরাজয়ের গ্লানি মোচন করতে শিশু শেখ রাসেলকেও হত্যা করে বলে তিঁনি উল্লেখ করেন। বেঁচে থাকলে শেখ রাসেলের এক সম্ভামনাময় জীবন হতো বলে উল্লেখ করে তিঁনি জানান যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে খুনী রাশেদ চোধুরীকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা হাসান মাহমুদের নেতৃত্বে সহ সভাপতি (বিশেষ প্রকল্প) ডঃ আবু নাসের রাজীব এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শাখাওয়াত আলীর নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট এক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে তিঁনি উল্লেখ করেন। গত মার্চ মাসে সিনেটের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর মেন্ডেজের সাথে আলাপকালে রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাঁর সহযোগিতা প্রার্থনা করেন এবং কারণসমূহ উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে মূল আলোচক যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারন সম্পাদক রানা হাসান মাহমুদ ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য গৃহীত পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। এই খুনিকে দেশে পাঠানোর জন্য বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শাখাওয়াত আলীর প্রচেষ্টায় পাঁচ হাজারেরও বেশি আবেদনপত্র সংগৃহীত হয়েছে বলে তিঁনি উল্লেখ করেন। এবার অনলাইনে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর গ্রহণ করে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি আলেহান্দ্রো মেয়োর্কাসকে পাঠানো হবে বলে উল্লেখ করেন তিঁনি। এজন্য মানবতার খাতিরে দলমত নির্বিশেষে সকল প্রবাসীকে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর দান করার জন্য তিঁনি বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেন। ১৫ই আগস্টের হত্যাকান্ডকে সন্ত্রাসী হামলা অবিহিত করে তিঁনি বলেন যে ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র “গ্লোবাল ওয়ার অন টেরর” ঘোষণা দিয়ে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস দমনের জন্য যুদ্ধ করছে অথচ রাশেদ চৌধুরীর মতো এক জঘন্য সন্ত্রাসীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিচ্ছে। প্রশাসনের এই দৈত্ব নীতির তিঁনি কঠোর সমালোচনা করেন।

যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ সভাপতি ডঃ আবু নাসের রাজীব বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে আদরের সন্তান শেখ রাসেলের ছেলেবেলা থেকেই মানবিক গুনাবলির দিক গুলো তুলে ধরেন। তিঁনি খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ভীরু কাপুরুষ বলে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ এর প্রচেষ্টার কার্যকারিতা বর্ণনা করেন এবং সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ক্যালিফোর্নিয়া শাখার সভাপতি নজরুল আলম। ক্যালিফোর্নিয়া শাখার গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তিঁনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সে বিষয়ে তিঁনি বিশদ বর্ণনা দেন এবং সবার সহযোগিতার জন্য আবেদন জানান। রাশেদ চৌদুরীরের মত মানবতা বিরোধী অপরাধীকে দেশে ফেরত পাঠাতে ব্যার্থ হলে শেখ রাসেলের আত্মা শান্তি পাবে না বলে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের গৃহীত উদ্যোগের সাথে শরিক হওয়ার জন্য সকল প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান |

বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহেদুল মাহমুদ জামি এবং মোফাজ্জেল হোসেন ঢালী সহ শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিবসের এই অনুষ্ঠানে লস এঞ্জেলেসের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ্র উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ক্যালিফোর্নিয়া শাখার সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলম।  অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জেবা জেবুন্নেসা। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক জেবা জেবুন্নেসা শহীদ শেখ রাসেল এবং তাঁর মেজো বোন ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী স্কুলের সহপাঠী ছিলেন উল্লেখ করে তাঁর পরিবারের সাথে শহীদ শেখ রাসেলের স্মৃতি সব সময়ই আবেগতাড়িত বলে বর্ণনা করেন।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর সাথে শহীদ শেখ রাসেলের জাপান সফরের একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের স্পন্সরশীপে নির্মিত  ‘ফিরে এসো বঙ্গবন্ধু’ ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরান থেকে তেলাওয়াত করেন মোহাম্মদ হোসেন রানা এবং পবিত্র ত্রিপিটক থেকে পাঠ করেন শিমুল বড়ুয়া। এরপর কমিউনিটির নেতৃবিন্দের উপস্থিতিতে শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯ তম জন্মদিন উপলক্ষে কেক কেটে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

  • facebook
  • googleplus
  • twitter
  • linkedin
  • linkedin
  • linkedin