রাবিতে হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা, দুশ্চিন্তায় শিক্ষার্থীরা

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আবাসিক হল বন্ধ রেখেই আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন।

গত ২১ ডিসেম্বর একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্তে বলা হয়, স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষাগুলো স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষা হবে। তবে আবাসিক হলসমূহ বন্ধ রেখে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে পরীক্ষা গ্রহণের ঘোষণায় উচ্ছ্বসিত হলেও করোনার অজুহাতে আবাসিক হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে দুশ্চিন্তায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা। কোথায় থেকে পরীক্ষা দেবেন, এ নিয়েই যত দুশ্চিন্তা শিক্ষার্থীদের। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেক শিক্ষার্থী।

উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অনেক শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে পারেননি। ইতোমধ্যে ৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। যথাসময়ে স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষা হলে অনেক শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারতেন। কিন্তু পরীক্ষা না হওয়ায় তারা সেই সুযোগ হারাচ্ছেন। এছাড়া দীর্ঘ সেশনজটের আশঙ্কা থেকেও দ্রুত পরীক্ষা গ্রহণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, পরীক্ষা গ্রহণের ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল খোলার দাবি জানায়। আবাসিক হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়কে তারা অযৌক্তিক দাবি করেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, কেবল স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাই যেহেতু পরীক্ষা দেবেন, সেহেতু হল খুললেও সামাজিক দূরত্ব রেখেই সবাই থাকতে পারবেন। এছাড়া হলে থাকার সুযোগ না পেলে যদি মেসে-ই থাকতে হয়, সেটি অনেকের জন্যই আর্থিক সক্ষমতার বাইরে যাবে।

বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সেতু সীন বলেন, পরীক্ষা ও হল খোলার বিষয় একসঙ্গে বিবেচ্য। কেন না পরীক্ষা নিলেই মানসিক চাপ কমবে এমন নয়। পরীক্ষা নিতে হবে চাপমুক্ত রেখেই। যেহেতু সবকিছুই স্বাভাবিক, সেক্ষেত্রে হল খুলে পরীক্ষা নিলে শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে মানবিক ও সুবিবেচিত সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করছি।

ফাইন্যান্স বিভাগের ইউসুফ আলী শিমুল বলেন, যেহেতু হল খুলবে না, সেহেতু পরীক্ষার ২০ দিন আগেই নোটিশ দিতে হতো। কারণ শিক্ষার্থীদের নতুন মেস ঠিক করা, হল থেকে সবকিছু শিফট করতে সময় লাগবে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খুলে পরীক্ষা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জীবন সিদ্দিকী বলেন, আকস্মিক পরীক্ষা শুরুর ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের মেস পাওয়া কঠিন হবে। এছাড়া মেসে থাকার আর্থিক সামর্থ্যও অনেকের নেই। যদি মেসে থেকে পরীক্ষা দিতে সমস্যা না হয়, তাহলে হলে থেকেও তো পরীক্ষা দিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

এ বিষয়ে রাবি প্রক্টর ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আবাসিক হল বন্ধ রেখে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে। তিনি বলেন, পরীক্ষা না হওয়ায় চাকরির আবেদন করতে পারছে না উল্লেখ করে অনেক শিক্ষার্থী নিজ দায়িত্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা জানিয়েছেন। তাই চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও সেশনজট লাঘবে বাইরে কষ্ট করে থেকে হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হবে।

  • facebook
  • googleplus
  • twitter
  • linkedin
  • linkedin
  • linkedin