• Homepage
  • >
  • বাংলাদেশ
  • >
  • রিজার্ভ নিয়ে গুজবের প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্সে

রিজার্ভ নিয়ে গুজবের প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্সে

ইউএস ডলার ব্যাংক নোট।

জার্নাল রিপোর্ট: গুজব তো গুজবই। তারপরও গুজবের ডালপালা ছড়ায়। সেই গুজবের ওপর ভিত্তি করে অনেকেই অনেক ভালোমন্দ সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন। তেমনি এক গুজব চলছে বাংলাদেশে বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ নিয়ে। কে বা কারা গুজব ছড়ায় যে বাংলাদেশের রিজার্ভ কমে গেছে। আর সেই গুজবের প্রভাব পড়েছে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সেও। গুজবে গা ভাসিয়ে অনেকে দেশে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে সত্যিকার অর্থে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে রিজার্ভে।
এখানে উল্লেখ্য, আগের মাসের ধারাবাহিকতায় গেল মাসে অর্থাৎ অক্টোবরে রেমিটেন্স কমেছে। প্রবাসীরা এ মাসে ১ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন, যা গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সাম্প্রতিক সময়ে একক মাস হিসেবে এর চেয়ে কম রেমিটেন্স এসেছিল সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে। ওই মাসে ১৪৯ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
নিউইয়র্কে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উধ্বর্তন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রিজার্ভ কমে যাবার গুজবের খবরে বহু প্রবাসী দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন না। অথচ অধিকাংশ প্রবাসীর রেমিট্যান্স নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। কারণ বেশিরভাগ প্রবাসী তাদের স্বজনদের কাছে অর্থ পাঠান। স্বজনদের কাছে না পৌঁছানো ওই অর্থের দায় প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানের। পরিবারের স্বজনরা ব্যাংক থেকে অর্থ তুলে নিয়ে যান। তারা সেগুলো দিয়ে পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করেন। অথচ একটি গুজবের কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক কমে গিয়েছে।
এদিকে রিজার্ভ নিয়ে গুজবের কারণে অনেক প্রবাসী যে দেশে অর্থ পাঠাচ্ছেন না তার প্রমাণ পাওয়া গেল কয়েকজন প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলে। এস্টোরিয়ার ৩৬ অ্যাভিনিউর বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি স্বজনদের জন্য নয়, প্রতিমাসে মোটা অংকের অর্থ দেশে পাঠান। এই অর্থ দেশের একটি সরকারি ব্যাংকে জমা হয়। কিন্তু সম্প্রতি রিজার্ভ নিয়ে নানা কথা ছড়িয়ে পড়ায় তিনি কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ব্যাংক থেকে বলা হচ্ছে যে এসব গুজব। কিন্তু এদেও স্বস্তি পাচ্ছেন না ওই প্রবাসী।
গুজব নিয়ে প্রবাসীদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস সম্প্রতি বলেছেন, রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছুই নেই, সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রিজার্ভ নিয়ে সবারই একধরনের মাথাব্যথা হয়ে গেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যখন ২১ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ হয়েছিল তখন মানুষের ধারণা ছিল এত অর্থ দিয়ে কী হবে? এমনকি ২০১৯ সালেও আমাদের ৩০ বা ৩১ বিলিয়ন ছিল, কারো কোনো চিন্তা ছিল না। ৪০ বিলিয়ন পার হওয়ার পর মনে হচ্ছে যেন, একটু এদিক-ওদিক হলেই দেশের ভিত্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। তাতে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। অতএব আমাদের এখানে দেখা যাচ্ছে, একটা পার্থক্য তৈরি হয়েছে। আমাদের ৪২ বিলিয়ন ডলার ছিল, সেটা একটু কম হয়েছে।’
রিজার্ভ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণত বলা হয় তিন মাসের আমদানি ব্যয় যদি থাকে, তাহলে ওই অর্থনীতিটা মজবুত। আমাদের পাঁচ মাসের অধিক আমদানি ব্যয় আছে। এর আগে বলা হতো, তিন মাসের খাদ্য আমদানির ক্যাপাসিটি আছে কি না। এখন আমরা শুধু খাদ্য আমদানি হিসাব করি না, আমাদের মোট যে আমদানি হয়, সেটা হিসাব করছি। তাতে দেখা যাচ্ছে, আমাদের পাঁচ মাসের বেশি আছে। অতএব আমাদের ঝুঁকি নেই।’
‘ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফ বলছে, বৈশ্বিক মন্দা হতে পারে। বিভিন্ন দেশে মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে, তাদের অর্থনীতি হোঁচট খাচ্ছে, তাহলে আমরা কি কোনো প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব না?’

  • facebook
  • googleplus
  • twitter
  • linkedin
  • linkedin
  • linkedin