• Homepage
  • >
  • সব খবর
  • >
  • গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব জাতিসংঘে গৃহীত

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব জাতিসংঘে গৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন কক্ষ। ছবি সংগৃহীত।.

আহরার অর্ণব : অবশেষে গাজায় যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়েছে। বিগত তিন সপ্তাহ ধরে গাজা উপত্যকায় মানবিক যুদ্ধ বিরতির জন্য বারবার আলোচনা করেও সফল হতে পারেনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার অভিভাবক এই পরিষদের উপর্যুপরি ব্যর্থতার পর স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্যালেস্টাইনের গাজায় মানবিক য্দ্ধু বিরতির জন্য আনিত একটি প্রস্তাব দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হয়।

গত ৭ অক্টোবর থেকে প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলায় এ পর্যন্ত ৩৫০০ শিশুসহ প্রায় ৭০০০ বেসামরিক নাগরিক মৃত্যুবরণ করে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১ মিলিয়নের বেশি মানুষ। বিগত ২০ দিন ধরে নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধ বিরতির কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো প্রস্তাবই সফলতার মুখ দেখেনি। অবশেষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অনুষ্ঠিত জরুরি সেশনে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে ভোটাভুটি আহ্বান করা হলে তা দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হয়।

উপস্থিত সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে ১২১টি দেশ পক্ষে, ১৪টি বিপক্ষে এবং ৪৪টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।নিউইয়র্কে জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশের পক্ষে এ প্রস্তাবে ভোট প্রদান করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর তিনি বলেন, ‘প্যালেস্টাইন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান অত্যন্ত পরিস্কার। তিনি এই বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তব্য প্রদানকালে প্যালেস্টাইনের জনগণের ন্যায্য অধিকার অর্জনে বিশ্ব সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করার দৃঢ় আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশ সবসময় প্যালেস্টাইনের পাশে থাকবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় পুনঃব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট প্রদান করে।’

রাষ্ট্রদূত মুহিত আরো বলেন, ‘আমরা শুধু এই প্রস্তাবের পক্ষেই ভোট প্রদান করিনি। নিরাপত্তা পরিষদ বিশ্বের কোথাও শান্তি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে কোন প্রস্তাব গ্রহণে ব্যর্থ হলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জরুরি সেশন আহ্বান করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। সেই জরুরি সেশন যাতে অবিলম্বে আহ্বান করা হয়, সেজন্য আমরা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছি। অন্যান্য দেশ যাতে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, সেইজন্য সম্ভাব্য দেশগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছি। এর আগে নিরাপত্তা পরিষদে প্যালেস্টাইন বিষয়ে উন্মুক্ত বিতর্ক চলাকালে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অটল ও অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সকল স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্যদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি।’

জাতিসংঘ আশা করছে – এই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার ফলে অবিলম্বে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতি হবে। বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা হবে। সেখানে মানবাধিকার সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীরা অবাধে প্রবেশের সুযোগ পাবে। বিদ্যুৎ, পানি, খাদ্য ও প্রয়োজনীয় ঔষধের সরবরাহ নিশ্চিত হবে। হাসপাতালগুলো যাতে আহত ও অসুস্থ নাগরিকদের সেবা দিতে পারে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করার পথ উন্মুক্ত হবে। একটি স্বাধীন, টেকসই ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের জনগণের বৈধ আকাক্সক্ষার ন্যায়সঙ্গত ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান অর্জনে বৈশ্বিক প্রচেষ্টার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার আগামী দিনগুলোতে অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, এই প্রস্তাবটি গ্রহণের প্রাক্কালে কানাডার পক্ষ থেকে ৭ অক্টোবর ইসরাইলে সংঘটিত হামলার বরাতে হামাসের প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করে একটি সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয়। কিন্তু ইসরাইলের আগ্রাসী কার্যকলাপ ও বর্বরোচিত হামলার বিষয়ে উক্ত সংশোধনীতে কোনো উল্লেখ না থাকায় মুসলিম বিশ্বসহ অধিকাংশ সদস্য রাষ্ট্র সংশোধনী প্রস্তাবনাটি প্রত্যাখান করে।

  • facebook
  • googleplus
  • twitter
  • linkedin
  • linkedin
  • linkedin